Posts

Showing posts from February, 2025

গরুর মারাত্মক রোগ সমূহ ও তাদের চিকিৎসা

Image
গরুর মৃত্যুর জন্য বিভিন্ন রোগ দায়ী হতে পারে, তবে কিছু রোগ বিশেষভাবে প্রাণঘাতী। নিচে গুরুত্বপূর্ণ রোগগুলোর বিস্তারিত কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার তথ্য দেওয়া হলো। গরুর মারাত্মক রোগ ১.গ রুর মারাত্মক রোগ ও তার কারণ: ১. বিষাণুজনিত রোগ (Viral Diseases): ১.১. খুরা রোগ (Foot and Mouth Disease - FMD): এটি এক ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ, যা খুব দ্রুত ছড়ায়। মুখ, জিহ্বা, দাঁত ও পায়ের নরম অংশে ক্ষত তৈরি হয়। আক্রান্ত গরু খেতে পারে না, ফলে দুর্বল হয়ে পড়ে। অত্যন্ত সংক্রামক এবং এক পশু থেকে অন্য পশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিরোধ: ভ্যাকসিন প্রয়োগ ও আক্রান্ত পশুকে আলাদা রাখা। ১.২. গোট পক্স (Goat Pox & Lumpy Skin Disease - LSD): গরুর চামড়ায় বড় বড় গুটি দেখা যায়। উচ্চমাত্রায় জ্বর হয়ে যায় এবং গরুর ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়। দুধ উৎপাদন কমে যায় এবং গুরুতর হলে মৃত্যুর কারণ হতে পারে। প্রতিরোধ: নিয়মিত ভ্যাকসিন দেওয়া এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। ১.৩. রাবিস বা জলাতঙ্ক (Rabies): কুকুর, শেয়াল বা অন্য রেবিস আক্রান্ত প্রাণীর কামড়ে ছড়ায়। গরুর আচরণ পরিবর্তন হয়, অতিরিক্ত লালা ঝরে, পাগলামি দেখা দেয়। আক্রান্ত...

গরুর বিভিন্ন সাধারণ রোগ এবং তাদের ঔষধের তালিকা

Image
গরুর বিভিন্ন সাধারণ রোগ এবং তাদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধের তালিকা নিচে দেওয়া হলো: গরুর ঔষধ ১. ক্ষুরারোগ (Foot and Mouth Disease - FMD): লক্ষণ: গরুর মুখ, পা ও থনিতে ক্ষত লালা ঝরা খাবার কম খাওয়া চিকিৎসা: ক্ষতস্থানে পোভিডন আয়োডিন প্রয়োগ এন্টিবায়োটিক (Oxytetracycline, Amoxicillin) ব্যথানাশক (Meloxicam, Flunixin meglumine) ২. অ্যাসিডোসিস (Acidosis): লক্ষণ: বেশি দানাদার খাবার খেলে পেট ফাঁপা পাতলা পায়খানা খেতে না চাওয়া চিকিৎসা: সোডা বা সোডিয়াম বাইকার্বোনেট ১০০-১৫০ গ্রাম পানির সাথে খাওয়ানো প্রাণিকে পর্যাপ্ত পানি খাওয়ানো প্রোবায়োটিক বা রুমেন বাফার দেওয়া ৩. ব্লোট (Bloat) বা পেট ফাঁপা: লক্ষণ: পেটের বাঁ পাশে অতিরিক্ত ফোলাভাব গরু অস্থির হয়ে ওঠা চিকিৎসা: ১০০-২০০ মিলি ভোজ্য তেল খাওয়ানো ট্রটারপাইন ওয়েল বা সোডিয়াম বাইকার্বোনেট ব্যবহার গুরুতর হলে পেট ফুটো করে গ্যাস বের করা ৪. অ্যানথ্রাক্স (Anthrax): লক্ষণ: হঠাৎ মৃত্যু শরীরে কালো ক্ষত রক্তপাত হওয়া চিকিৎসা: দ্রুত পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া পেনিসিলিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক (Procaine Penicillin) প্রতিরোধ: নিয়মিত ...

হাঁস-মুরগির সাধারণ রোগসমূহ ও তাদের ঔষধের তালিকা

Image
হাঁস-মুরগির সাধারণ রোগসমূহ ও তাদের ওষুধের তালিকা ঃ ঔষধ ১. ভাইরাসজনিত রোগসমূহ ও প্রতিকারঃ ক) বার্ড ফ্লু (Avian Influenza): লক্ষণ: হঠাৎ মৃত্যুহার বৃদ্ধি, শ্বাসকষ্ট, খিদে কমে যাওয়া, ফুলে যাওয়া মাথা ওষুধ: নির্দিষ্ট ওষুধ নেই, তবে টিকা (H5N1 Vaccine) ব্যবহার করা হয় প্রতিরোধ: সুরক্ষিত পরিবেশ রাখা, জীবাণুনাশক ব্যবহার, সংক্রমিত পাখি ধ্বংস করা খ) নিউক্যাসল রোগ (Ranikhet Disease): লক্ষণ: শ্বাসকষ্ট, পাখার পতন, গলা মোচড়ানো, পাতলা হলুদ-সবুজ পায়খানা ওষুধ: নির্দিষ্ট ওষুধ নেই, তবে NDV টিকা ব্যবহার করা হয় প্রতিরোধ: নিয়মিত টিকাদান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা গ) গামবোরো রোগ (Infectious Bursal Disease - IBD): লক্ষণ: ডায়রিয়া, ক্ষুধামন্দা, পাখি দুর্বল হয়ে পড়া ওষুধ: IBD টিকা (Gumboro vaccine) ব্যবহার করা হয় প্রতিরোধ: সঠিক টিকাদান ও পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা ২. ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণজনিত রোগসমূহ ও প্রতিকারঃ ক) কলেরা (Fowl Cholera): লক্ষণ: শ্বাসকষ্ট, পাতলা হলুদ পায়খানা, ঝিমানো ভাব ওষুধ: টেট্রাসাইক্লিন (Tetracycline), এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন প্রতিরোধ: টিকা প্রদান, খামার পরিষ্কার রা...

ছাগলের বিভিন্ন সাধারণ রোগ ও তাদের ওষুধের তালিকা

Image
এখানে ছাগলের বিভিন্ন সাধারণ রোগ ও তাদের সম্ভাব্য ওষুধের তালিকা দেওয়া হলোঃ বিভিন্ন ঔষধ ১. ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ ও চিকিৎসাঃ এনথ্রাক্স (Anthrax): পেনিসিলিন (Penicillin) অক্সিটেট্রাসাইক্লিন (Oxytetracycline) পেস্টুরেলোসিস (Pasteurellosis): সুলফাড্রাগস (Sulfa Drugs) অক্সিটেট্রাসাইক্লিন (Oxytetracycline) ব্যাকটেরিয়াল ডায়রিয়া: নরফ্লক্সাসিন (Norfloxacin) মেট্রোনিডাজল (Metronidazole) ব্রুসেলোসিস (Brucellosis): টেট্রাসাইক্লিন (Tetracycline) স্ট্রেপ্টোমাইসিন (Streptomycin) ২. ভাইরাসজনিত রোগ ও চিকিৎসাঃ পিপিআর (Peste des Petits Ruminants - PPR): ভ্যাকসিন প্রয়োগ (প্রতিরোধের জন্য) সমর্থনমূলক চিকিৎসা যেমন—এলেক্ট্রোলাইট মৌখিক ক্ষত (Orf Disease): পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট (Potassium Permanganate) অ্যান্টিসেপ্টিক মলম ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (FMD): FMD ভ্যাকসিন (প্রতিরোধের জন্য) এন্টিসেপ্টিক গার্গল ৩. পরজীবীজনিত রোগ ও চিকিৎসাঃ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল কৃমি সংক্রমণ: অ্যালবেনডাজল (Albendazole) লেভামিসল (Levamisole) লিভার ফ্লুক সংক্রমণ: ট্রাইক্লবে...

ছাগলের মুখ দিয়ে ফেনা বের হওয়ার কারণ

Image
ছাগলের মুখ দিয়ে ফেনা বের হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, যা রোগ, খাদ্যজনিত সমস্যা বা বিষক্রিয়ার কারণে হতে পারে। নিচে বিস্তারিতভাবে কারণগুলো ব্যাখ্যা করা হলোঃ ছাগলের মুখে ফেনা ১. সংক্রামক রোগঃ      পেস্টরেলোসিস (Pasteurellosis)      ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ      ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্র আক্রান্ত হয়      জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ও মুখ দিয়ে ফেনা বের হওয়া ক. রেবিস (Rabies) বা জলাতঙ্ক:      ভাইরাসজনিত প্রাণঘাতী রোগ      আচরণগত পরিবর্তন, লালার অতিরিক্ত নিঃসরণ      মুখ দিয়ে ফেনা বের হওয়া এবং খিঁচুনি খ.  লিস্টেরিওসিস (Listeriosis):      ব্যাকটেরিয়াজনিত নিউরোলজিক্যাল রোগ      মাথা ঘোরা, খিঁচুনি, মুখ দিয়ে ফেনা বের হওয়া গ.  এনথ্রাক্স (Anthrax):      ব্যাকটেরিয়া (Bacillus anthracis) সংক্রমণ      হঠাৎ মৃত্যু, মুখ দিয়ে রক্ত ও ফেনা বের হওয়া ঘ. ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (FMD):      ভাইরাসজনিত সংক্রমণ     ...

ছাগলের পাতলা পায়খানা রোগের চিকিৎসা

Image
ছাগলের পাতলা পায়খানা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে নিম্ন বিস্তারিত আলোচনা কার হলোঃ পাতলা পায়খানা রোগ ১. পানিশূন্যতা রোধ: ওআরএস (ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন) খাওয়াতে হবে। পরিষ্কার পানি বা ইলেকট্রোলাইট সমৃদ্ধ দ্রবণ সরবরাহ করতে হবে। গুরুতর ডিহাইড্রেশনের ক্ষেত্রে স্যালাইন দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। ২. খাবারের নিয়ন্ত্রণ: সংক্রমণ কমাতে একদিন খাবার বন্ধ রাখা যেতে পারে, তবে পানি সবসময় দিতে হবে। হালকা, সহজপাচ্য এবং কম ফাইবারযুক্ত খাদ্য যেমন ঘাসের পরিবর্তে খড়, ভাতের মাড় বা পাকা কলা খাওয়ানো যেতে পারে। সংক্রমণ বা অ্যালার্জি সন্দেহ হলে সেই খাবার বন্ধ রাখতে হবে। ৩. প্রোবায়োটিক ব্যবহার: অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া পুনরুদ্ধারের জন্য প্রোবায়োটিক সরবরাহ করতে হবে। ইয়োগার্ট বা বিশেষ প্রোবায়োটিক পাউডার খাওয়ানো যেতে পারে। ৪. অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ: ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে (ভেটেরিনারিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী)। সলফোনামাইড, মেট্রোনিডাজল, বা অক্সিটেট্রাসাইক্লিন প্রয়োগ করা যেতে পারে। আরো পড়ুনঃ>> ছাগলের পাতলা পায়খানা রোগের লক্ষণ ৫. অ্যান্টিপ্য...

ছাগলের পাতলা পায়খানা রোগের লক্ষণ

Image
ছাগলের পাতলা পায়খানা রোগের লক্ষণ নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ ছাগলের পাতলা পায়খানা ১. মল ত্যাগের ধরন পরিবর্তন: মল স্বাভাবিকের তুলনায় পানির মতো বা অত্যন্ত নরম হয়ে যায়। ২. মলের রঙ পরিবর্তন: মলের রঙ সবুজ, কালো বা হলুদ হতে পারে, যা খাদ্য গ্রহণ বা সংক্রমণের ওপর নির্ভর করে। ৩. মলের দুর্গন্ধ: স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি তীব্র এবং অস্বাভাবিক দুর্গন্ধযুক্ত মল ত্যাগ করে। ৪. মল ত্যাগের পরিমাণ বৃদ্ধি: বারবার এবং অল্প অল্প করে মল ত্যাগ করার প্রবণতা দেখা যায়। ৫. পেটের অস্বস্তি: পেট ফাঁপা বা ব্যথার কারণে ছাগল অস্থির হতে পারে। ৬. অবসন্নতা: ছাগল দুর্বল ও ক্লান্ত দেখায়, চলাফেরায় অলসতা আসে। ৭. ক্ষুধামন্দা: খাদ্যে অনীহা দেখা যায়, খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়। ৮. ওজন হ্রাস: দীর্ঘমেয়াদে পাতলা পায়খানার কারণে ওজন কমতে থাকে। ৯. ডিহাইড্রেশন: শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের হওয়ায় চামড়া শুকনো ও চেপে ধরলে সহজে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে দেরি হয়। ১০. চামড়ার স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস: পানি শূন্যতার কারণে চামড়া ঢিলা হয়ে যায়। ১১. চোখের দৃষ্টি নিষ্প্রভ: চোখের চারপাশ ফাঁপা এবং দৃষ্টি মলিন হতে পা...

ছাগলের টিটেনাস রোগের চিকিৎসা

Image
ছাগলের টিটেনাস রোগের চিকিৎসা দ্রুত ও সঠিকভাবে না করলে এটি মারাত্মক হতে পারে এবং মৃত্যু ঘটতে পারে। টিটেনাস Clostridium tetani ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট, যা স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। নিচে টিটেনাস রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হলোঃ ছাগলের টিটেনাস ১. প্রাথমিক চিকিৎসা: আক্রান্ত ছাগলকে আলাদা রাখা: সংক্রমণ ছড়ানো রোধে আক্রান্ত ছাগলকে অন্য সুস্থ প্রাণী থেকে আলাদা রাখতে হবে। নিরিবিলি ও অন্ধকার জায়গা: খিঁচুনি এড়াতে ছাগলকে শান্ত, কম আলো ও শব্দহীন স্থানে রাখতে হবে। নরম ও আরামদায়ক পরিবেশ: মাটিতে নরম বিছানা বা খড় বিছিয়ে ছাগলকে শুয়ে থাকতে সহায়তা করতে হবে, যাতে খিঁচুনির সময় আঘাত না পায়। ২. ক্ষতস্থানের যত্ন: ক্ষত পরিষ্কার করা: টিটেনাসের ব্যাকটেরিয়া সাধারণত ক্ষতস্থানের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে, তাই ক্ষতস্থানের চারপাশ পরিষ্কার করতে হবে। ডিসইনফেক্টেন্ট ব্যবহার: অ্যান্টিসেপটিক দ্রবণ (যেমন বিটাডিন বা হাইড্রোজেন পারক্সাইড) দিয়ে ক্ষত পরিষ্কার করতে হবে। মৃত টিস্যু অপসারণ: প্রয়োজনে মৃত টিস্যু অপসারণ করতে হতে পারে, যা পশুচিকিৎসকের মাধ্যমে করতে হবে। ৩. অ্...

ছাগলের টিটেনাস রোগের লক্ষণ

Image
ছাগলের টিটেনাস রোগের লক্ষণগুলো সাধারণত ব্যাকটেরিয়া  Clostridium tetani  সংক্রমণের ফলে দেখা যায়। এই ব্যাকটেরিয়া মাটি, ধুলো এবং প্রাণীর মলমূত্রে পাওয়া যায় এবং ক্ষতস্থানে প্রবেশ করলে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে। নিচে টিটেনাসের লক্ষণগুলো উল্লেখ করা হলোঃ ছাগলের টিটেনাস ১. প্রাথমিক লক্ষণ: অস্থিরতা ও ভয়:  আক্রান্ত ছাগল অস্থির এবং অস্বাভাবিকভাবে ভীত হতে পারে। ক্ষুধামন্দা:  খাওয়ার আগ্রহ কমে যায় এবং খাবার খেতে চায় না। খিঁচুনি:  শরীরে হালকা খিঁচুনি অনুভূত হতে পারে, যা সময়ের সঙ্গে বাড়তে পারে। চোখের অস্বাভাবিক নড়াচড়া:  চোখের পাতা দ্রুত নড়াচড়া করতে পারে। ২. স্নায়ুতন্ত্রের লক্ষণ: মাংসপেশীর শক্ত হয়ে যাওয়া:  মাংসপেশী শক্ত ও কষে যাওয়া শুরু হয়, বিশেষ করে ঘাড় ও পিঠের পেশীতে। মুখের পেশী সংকোচন:  মুখের পেশী শক্ত হয়ে মুখ বিকৃত হয়ে যেতে পারে (রিসাস সারডোনিকাস)। মাড়ি চেপে ধরা:  চোয়াল শক্ত হয়ে যায়, যার ফলে মুখ বন্ধ হয়ে যায় (ট্রিজমাস)। ৩. গতিশীলতার পরিবর্তন: দাঁড়ানোর সমস্যায় ভুগা:  ছাগল ঠিকমতো দাঁড়াতে বা হাঁটতে পারে না। পা সোজা ও কঠিন হওয...

ছাগলের ঘাড় বাঁকা রোগের চিকিৎসা

Image
ছাগলের ঘাড় বাঁকা রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে এর কারণের ওপর। এটি সাধারণত লিস্টেরিওসিস (Listeriosis), থায়ামিন (ভিটামিন B1) ঘাটতি, নিউরোলজিক্যাল সমস্যা, আঘাত বা অন্যান্য সংক্রমণের ফলে হতে পারে। নিচে চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো: ছাগলের ঘাড় বাঁকা রোগ ১. প্রাথমিক চিকিৎসা: আক্রান্ত ছাগলকে অন্যদের থেকে আলাদা করে রাখা শান্ত পরিবেশে রাখা, যাতে স্ট্রেস না হয় পরিষ্কার ও শুকনো জায়গায় রাখা পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত করা প্রয়োজন হলে গরম কাপড় বা কম্বল দিয়ে গা ঢেকে রাখা তরল খাবার ও সহজে হজমযোগ্য খাবার সরবরাহ করা ২. ওষুধ ও সাপোর্টিভ চিকিৎসা: (ক) লিস্টেরিওসিস (Listeriosis) সংক্রমণজনিত হলে: অ্যান্টিবায়োটিক: পেনিসিলিন (Penicillin) বা অক্সিটেট্রাসাইক্লিন (Oxytetracycline) 3-5 দিন ইনজেকশন হিসেবে দেওয়া ডোজ: পশুচিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্টেরয়েড বা প্রদাহরোধী ওষুধ: প্রদাহ কমানোর জন্য ডেক্সামেথাসোন (Dexamethasone) প্রবায়োটিক ও হজম সহায়ক ওষুধ: অন্ত্রের কার্যকারিতা ঠিক রাখার জন্য (খ) থায়ামিন (ভিটামিন B1) ঘাটতি হলে: থায়ামিন ইনজেকশন (Vitamin B1): ডোজ: 10-20 mg...

ছাগলের ঘাড় বাঁকা রোগের লক্ষণ

Image
ছাগলের ঘাড় বাঁকা রোগ (Goat Torticollis) সাধারণত নিউরোলজিক্যাল বা সংক্রামক কারণে হতে পারে। নিচে এর লক্ষণসমূহ দেওয়া হলো: ছাগলের ঘাড় বাঁকা ছাগলের ঘাড় বাঁকা রোগের লক্ষণসমূহ: ১. শারীরিক লক্ষণ: ঘাড় একদিকে বাঁকা হয়ে যায় মাথা উল্টো দিকে ঘুরিয়ে রাখা ভারসাম্যহীনভাবে চলাফেরা করা মাংসপেশির দুর্বলতা শরীরের অন্য অংশে ঝাঁকি বা খিঁচুনি দেখা দেওয়া দীর্ঘক্ষণ একই অবস্থানে মাথা ঝুলিয়ে রাখা খাবার খাওয়ার সময় অস্বস্তি অনুভব করা চোয়াল শক্ত হয়ে যাওয়া বা সঠিকভাবে চিবুতে না পারা ওজন কমে যাওয়া ২. স্নায়বিক (নিউরোলজিক্যাল) লক্ষণ: চোখ ঘোরানো (Nystagmus) বারবার একই দিকে পড়ে যাওয়া দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া বা অন্ধত্ব কোনো শব্দ বা আলোতে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানো চলাফেরায় অস্বাভাবিকতা মাথা ও শরীরের অনিয়ন্ত্রিত কাঁপুনি কোনো কিছুর ওপর ঠিকমতো দাঁড়াতে না পারা পা টেনে টেনে হাঁটা ৩. খাওয়া ও পরিপাক সংক্রান্ত লক্ষণ: খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া খাবার খেতে না পারা বা খাওয়ার ইচ্ছা কমে যাওয়া ঘন ঘন পানি পান করা বা পানির প্রতি আগ্রহ হারানো মুখের ভেতরে লালা জমা হওয়া খাবার মুখ থেকে পড়ে যাওয়া ৪. আচ...

গরুর বিভিন্ন রোগ এবং তাদের চিকিৎসা

Image
 গরুর বিভিন্ন রোগ এবং তাদের চিকিৎসা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো: গরুর রোগ ১. গরুর সাধারণ রোগ ও চিকিৎসাঃ (১) খুরা রোগ (Foot and Mouth Disease - FMD): লক্ষণ: মুখ, খুর ও স্তনের চারপাশে ফোসকা পড়া অতিরিক্ত লালা পড়া খাওয়া কমে যাওয়া জ্বর চিকিৎসা: আক্রান্ত গরুকে আলাদা রাখা মুখ ও ক্ষত স্থানে গ্লিসারিন ও পোভিডোন আয়োডিন লাগানো খুর পরিষ্কার করে তুলা দিয়ে পোভিডোন আয়োডিন দেওয়া ভ্যাকসিন নেওয়া (প্রতিরোধের জন্য) (২) অ্যান্ত্রাক্স (Anthrax): লক্ষণ: হঠাৎ মৃত্যু নাক, মুখ ও মলদ্বার থেকে কালো রক্তপাত শরীরে ফুলে যাওয়া চিকিৎসা: দ্রুত পশুচিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া আক্রান্ত গরুর লাশ মাটির নিচে পুঁতে ফেলা সময়মতো ভ্যাকসিন দেওয়া (৩) যকৃতের ফোঁড়া (Liver Fluke Disease): লক্ষণ: ওজন কমে যাওয়া দুর্বলতা ও ক্ষুধামন্দা ডায়রিয়া চিকিৎসা: অ্যালবেনডাজল বা ট্রাইক্লবেনডাজল জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো জলাশয় পরিস্কার রাখা (৪) রক্ত আমাশয় (Hemorrhagic Septicemia - HS): লক্ষণ: হঠাৎ জ্বর গলার নিচে ফুলে যাওয়া শ্বাসকষ্ট চিকিৎসা: পশুচিকিৎসকের পরামর্শে এন্টিবায়োটিক (টেট্রাসাইক্লিন) ...

দুর্বল গরুর চিকিৎসা

Image
গরু শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়লে এটি তার উৎপাদনশীলতা ও স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। দুর্বলতার কারণ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা প্রদান করা জরুরি। নিচে দুর্বল গরুর বিভিন্ন কারণ, লক্ষণ, প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করা হলো। দুর্বল গরু ১. দুর্বল গরুর সাধারণ লক্ষণ: গরুর দুর্বলতার প্রধান কিছু লক্ষণ হলো: হাঁটতে কষ্ট হওয়া বা শরীর ভারসাম্যহীন হয়ে পড়া অতিরিক্ত শুয়ে থাকা বা সহজে উঠতে না পারা শরীরের ওজন হ্রাস পাওয়া খাদ্যে অনীহা বা কম খাওয়া ত্বক ও লোম নিস্তেজ হয়ে যাওয়া দুধ উৎপাদন কমে যাওয়া (যদি এটি দুগ্ধ গরু হয়) শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা বা অনিয়মিত হার্টবিট হাড় ও মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যাওয়া ২. দুর্বলতার কারণসমূহ: গরুর দুর্বল হওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে, যেমন: ক. অপুষ্টি ও খারাপ খাদ্য ব্যবস্থাপনা: পর্যাপ্ত প্রোটিন, ভিটামিন, ও খনিজ না পাওয়া খাদ্যে পর্যাপ্ত শক্তি না থাকা নিম্নমানের শুকনো খড় বা নষ্ট হয়ে যাওয়া খাবার খাওয়া অপর্যাপ্ত পানি গ্রহণ খ. বিভিন্ন রোগ ও সংক্রমণ: পরজীবী সংক্রমণ (অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক) ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, বা ছত্রাকজনিত সংক্রমণ লিভার ও কিডনির রোগ গরুর ...

গরুর ভাইরাসজনিত রোগের চিকিৎসা

Image
গরুর ভাইরাসজনিত রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে রোগের ধরন ও তীব্রতার ওপর। যেহেতু ভাইরাসজনিত রোগের জন্য নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক নেই, তাই চিকিৎসা মূলত লক্ষণভিত্তিক ও সমর্থনমূলক হয়। নিচে বিভিন্ন ভাইরাসজনিত রোগের চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো: গরুর ভাইরাস জনিত রোগ ১. লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD) এর চিকিৎসা: আক্রান্ত গরুকে আলাদা রাখা ব্যথা ও জ্বর কমানোর জন্য NSAIDs (Meloxicam, Flunixin Meglumine) ব্যবহার ক্ষত শুকানোর জন্য পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট বা টিনচার আয়োডিন প্রয়োগ ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ এড়াতে অ্যান্টিবায়োটিক (Oxytetracycline, Enrofloxacin) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট পর্যাপ্ত পানি ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ ২. ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (FMD) এর চিকিৎসা: গরুকে বিশ্রামে রাখা ও আলাদা করা খুর ও মুখের ক্ষত পরিষ্কার করতে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট বা মাইল্ড এন্টিসেপটিক ব্যবহার ব্যথা ও জ্বর কমাতে NSAIDs (Flunixin Meglumine, Meloxicam) ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ প্রতিরোধে অ্যান্টিবায়োটিক (Oxytetracycline, Enrofloxacin) লালা ঝরার কারণে পানিশূন্যতা রোধে ওরাল রিহাইড্...

গরুর ভাইরাসজনিত রোগের লক্ষণ সমূহ

Image
গরুর ভাইরাসজনিত রোগগুলোর লক্ষণ রোগভেদে ভিন্ন হতে পারে। নিচে বিভিন্ন ভাইরাসজনিত রোগের লক্ষণগুলো উল্লেখ করা হলো: ভাইরাস জনিত রোগ ১. লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD): চামড়ার উপর গুটি (নডিউল) তৈরি হয় জ্বর (১০৪-১০৬°F) ক্ষুধামন্দা ও দুধ উৎপাদন কমে যাওয়া লসিকা গ্রন্থি (Lymph nodes) ফোলা ত্বকে ক্ষত সৃষ্টি হওয়া হাঁটতে কষ্ট হওয়া চোখ ও নাক দিয়ে পানি পড়া ২. ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (FMD): জ্বর ও শরীর গরম হয়ে যাওয়া মুখ, জিহ্বা, দাঁত ও খুরে ফোসকা পড়া ক্ষতস্থানে ব্যথা হওয়া খাওয়া-দাওয়ায় অনীহা লালা ঝরা ও দাঁত ঘষা ল্যামিনাইটিস (খুর ফোলা ও ব্যথা) ৩. রেবিস (Rabies): আচরণগত পরিবর্তন অতিরিক্ত লালা ঝরা খাওয়া ও পানিতে অনীহা আক্রমণাত্মক আচরণ পেশির খিঁচুনি পক্ষাঘাত ও অবশ হয়ে যাওয়া ৪. বোভাইন ভাইরাল ডায়রিয়া (BVD): দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া জ্বর নাক ও চোখ দিয়ে সর্দি পড়া মুখের ভেতর ক্ষত তৈরি হওয়া ওজন কমে যাওয়া গর্ভপাত ও বন্ধ্যাত্ব ৫. রিনোট্রাকাইটিস (IBR - Infectious Bovine Rhinotracheitis): উচ্চ জ্বর নাক দিয়ে ঘন সর্দি পড়া শ্বাসকষ্ট চোখ লাল হয়ে যাওয়া মুখ ও নাকের চারপাশে ক্ষত গ...

গরুর ওলান ফোলা রোগ (Mastitis) এর চিকিৎসা

Image
গরুর ওলান ফোলা রোগ (Mastitis) একটি মারাত্মক সমস্যা, যা দ্রুত চিকিৎসা করা না হলে দুধ উৎপাদন কমে যেতে পারে এবং গরুর স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। নিচে এর চিকিৎসা প্রক্রিয়া উল্লেখ করা হলো গরুর ওলান ফোলা রোগের চিকিৎসা ১. প্রাথমিক চিকিৎসা: সংক্রমিত ওলান আলাদা করে চিহ্নিত করুন দুধ সম্পূর্ণভাবে বের করে ফেলুন, যাতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ছড়াতে না পারে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত হাতে দুধ দোহন করুন আক্রান্ত ওলানে কুসুম গরম পানির সেঁক দিন ওলান মৃদু হাতে ম্যাসাজ করুন, যাতে দুধ বের হতে সাহায্য করে ২. ওষুধ ও এন্টিবায়োটিক ব্যবহার: পশু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন ব্যবহার করুন পেনিসিলিন, অক্সিটেট্রাসাইক্লিন, এমপিসিলিন জাতীয় এন্টিবায়োটিক কার্যকর হতে পারে দুধের মধ্যে পুঁজ বা রক্ত থাকলে ইনফিউশন পদ্ধতিতে এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা যেতে পারে গরুর শরীরের তাপমাত্রা বেশি থাকলে জ্বর কমানোর ওষুধ (Antipyretic) প্রয়োগ করুন ব্যথা কমানোর জন্য NSAIDs (Non-Steroidal Anti-Inflammatory Drugs) ব্যবহার করা যেতে পারে ওলানে সরাসরি এন্টিবায়োটিক মলম (Intramammary Infusi...

গরুর ওলান ফোলা রোগ (Mastitis) এর লক্ষণ

Image
গরুর ওলান ফোলা রোগ (Mastitis) একটি সাধারণ সমস্যা, যা সাধারণত ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক বা আঘাতের কারণে হয়। নিচে এর লক্ষণসমূহ উল্লেখ করা হলো গরুর ওলান ফোলা ১. শারীরিক লক্ষণ: ওলান (থান) অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যায় ওলানে ব্যথা অনুভূত হয় ওলান স্পর্শ করলে গরম মনে হয় লালচে ও শক্ত হয়ে যায় এক বা একাধিক কোয়ার্টার ফুলে যেতে পারে গরু ওলান স্পর্শ করলে অস্বস্তি বা ব্যথার প্রতিক্রিয়া দেখায় ওলানে ঘা বা ফোঁড়ার মতো অবস্থা দেখা দিতে পারে ২. দুধের পরিবর্তন: দুধের রঙ পরিবর্তন হতে পারে (হলুদ, লালচে বা সবুজাভ) দুধ পাতলা বা ঘন হয়ে যেতে পারে দুধে পুঁজ বা রক্তের দাগ দেখা যায় দুধ থেকে দুর্গন্ধ আসতে পারে দুধে ছোট দানা বা জমাট অংশ দেখা যায় ৩. গরুর আচরণগত পরিবর্তন: ব্যথার কারণে গরু অস্থির হয়ে ওঠে স্বাভাবিকের তুলনায় কম দুধ দিতে পারে দুগ্ধদানের সময় গরু লাথি মারতে পারে খাওয়া-দাওয়া কমে যেতে পারে শরীর অবসাদগ্রস্ত দেখায় মাঝে মাঝে জ্বর অনুভূত হতে পারে ৪. সংক্রমণের লক্ষণ: গরুর শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ওলান থেকে পুঁজ বের হতে পারে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে ওলান থেকে বাজ...